রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠি শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়ামে সদ্য সমাপ্ত হওয়া “রুপসীবাংলা মেলা” আমাদের খেলার মাঠটি ক্ষতবিক্ষত করে দিয়ে গেছে। মেলা শেষে মাঠের হাল প্রায় বেহাল। দেখলে মনে হবে কোনো যুদ্ধ বিধ্বস্থ এলাকা এটি। এমনই মন্তব্য করে ক্ষোভ জানিয়েছে এখানকার নিয়মিত খেলোয়াররা।
উল্লেখ্য, এই মাঠে গত ২২ মার্চ শেষ হয় মাসব্যাপী চলতে থাকা রুপসীবাংলা মেলা। ষ্টেডিয়ামের প্রধান গেইটে মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান হিসেবে লেখা ছিলো জেলা প্রশাসনের নাম। তবে এ মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলো খুলনার প্রতিষ্ঠান মেসার্স চামেলী ট্রেড্রার্স।
এই মাঠে খেলোয়ারদের নিয়মিত অনুশীলন বন্ধ হয় চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার। ঐ দিন দুপুরে মেলার মাঠ প্রস্তুতের কাজ শুরু করা হয়। টানা ৪৮ দিন মাঠ থাকে মেলা পরিচালনা কমিটির দখলে। কিন্তু মেলা শেষে মাঠ পরিস্কার করে খেলাধূলার উপযোগী না করে দিয়েই ঝালকাঠি ত্যাগ করে চামেলী ট্রেডার্সের লোকজন।
এদিকে মেলা শেষ হওয়ার ১০ দিনেও মাঠটি খেলাধুলার উপযোগী না করায় জেলা প্রশাসন এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় খেলোয়াররা। তবে এতো দিনে মাঠ পরিস্কার না করার বিষয়ে দায় নিতে নারাজ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা। তারা বলছেন জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে উদ্যোগ নিবে। আর জেলা প্রশাসন বলছে মেলা পরিচালনা কর্তৃপক্ষ মাঠ পরিস্কার করবে।
ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক আল মামুন খান ধলু এ বিষয়ে গনমাধ্যমে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করলেও সংস্থাটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আবু সাইদ খান বলেন, ‘আগামী সভায় আমরা মাঠের বিষয়টি এজেন্ডায় রাখবো। যেহেতু জেলা প্রশাসক মহোদয় মাসব্যাপী মেলার জন্য খেলার মাঠ বরাদ্দ দিয়ে অনুমতি দিয়েছেন, সেহেতু এই মাঠ তারাই ঠিক করে দিবে। এর দায়ভার ক্রীড়াসংস্থা নিবেনা। তাছাড়া জেলা প্রশাসক মহোদয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে আমরা আশাবাদি।’
ক্রীড়াসংস্থার কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য রইচ আহম্মেদ অন্তু বলেন, ‘ডিসি অফিস মেলা কমিটির কাছে মাঠ ভাড়া দিয়েছেন। সেই টাকার কিছু অংশ যদি ক্রীড়া সংস্থাকে দেয়া হয় তাহলে আমরা মাঠ মেরামত করে খেলাধূলার উপযোগী করে দিতে পারতাম। কারন আমাদের হাতে বাড়তি অর্থ নেই।’
সংস্থার আরেক সদস্য সাবেক খেলোয়ার হানিফ মাহমুদ বলেন, ‘যতদিন মাঠটি খেলাধূলার উপযোগী না করা হবে ততদিন অনুশীলন করতে না পেরে অনেকেই খেলাধূলা থেকে দুরে সরে যাবে।’
সদস্য তুহিন আজাদ বলেন, ‘মাঠের মধ্যে লক্ষাধিক ইট বিছানো আছে। এই ইট না সরিয়ে মেলা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান চামেলী ট্রেডার্সের লোকজন চলে গিয়েছে। তাদের উচিৎ ছিলো, মাঠটি দ্রুত পরিস্কার করে খেলাধূলার উপযোগী করে দেয়া।
ক্রীড়াপ্রেমীরা বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের সুস্থ বিকাশের জন্য খেলার মাঠ একটি অপরিহার্য বিষয়। মাঠে খেলাধুলা করলে যেমন শারীরিক সামর্থ্য বাড়ে, তেমনি মন সতেজ হয়। এ ছাড়া অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, যারা মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা করে, তারা অধিকাংশই বিপথগামী হয় না।’
জেলা প্রশাসক ফারহা গুল নিঝুম মুঠোফোনে বলেন, ‘মেলা শেষ হওয়ার দু’দিনের মধ্যে মাঠ পরিস্কার করে দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এতোদিনে কেনো ওরা (চামেলী ট্রেডার্স) মাঠ পরিস্কার করেনি বিষয়টি আমি আজই খোজ নিচ্ছি।’
এদিকে মেলা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান খুলনার চামেলী ট্রেডার্স এর সত্বাধিকারী মো. রাসেল হাওলাদার বলেন, আমি লক্ষাধিক ইট ভাড়া নিয়ে মাঠে বসিয়েছিলাম। যাদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছি মাঠ পরিস্কার করার দায়িত্ব তাদের।